কলকাতা সংবাদদাতা:মঙ্গলবার পশ্চিমবাংলায় করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা পেরিয়ে গেল ১ লক্ষ। শেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে সংক্রমিত হয়েছেন ২ হাজার ৯৩১ জন। এর ফলে রাজ্যে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ১ হাজার ৩৯০ জন। তবে এখন করোনা ভাইরাস সক্রিয় রয়েছে ২৫ হাজার ৮৪৬ জনের শরীরে।
এদিন করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪৯ জনের। ফলে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা হয়েছে ২ হাজার ১৪৯ জন। তবে এদিনের উল্লেখযোগ্য খবর হল, শেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩ হাজার ৬৭ জন। এর অর্থ, এদিন যত জন সংক্রমিত হয়েছেন, তার চেয়েও বেশি মানুষ করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ফলে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার ৩৯৫ জন। ফলে রাজ্যে সুস্থতার হার এখন ৭২.৩৯ শতাংশ। রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রকাশিত বুলেটিন থেকে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। এদিন রাজ্যে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ২৭ হাজার ১৫ জনের। ফলে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মোট করোনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লক্ষ ৫৯ হাজার ২১১। তার মানে প্রতি ১০ লক্ষে ১২ হাজার ৮৮০ জনের করোনা পরীক্ষা হয়েছে।
এদিন যাঁরা সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কলকাতার রয়েছেন ৭১১ জন। এ ছাড়া উত্তর ২৪ পরগনার ৬৪৩ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ২২০ জন, হাওড়ায় ১৫৬ জন, নদিয়ায় ১২৭ জন, মালদায় ১১৭ জন, হুগলিতে ১১৫ জন, পূর্ব মেদিনীপুরে ১১২ জন, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৯৯ জন, বাঁকুড়ায় ৮৯ জন, পূর্ব বর্ধমানে ৬৯ জন, মুর্শিদাবাদে ৬২ জন, পশ্চিম বর্ধমানে ৬০ জন, আলিপুরদুয়ারে ৬০ জন, জলপাইগুড়িতে ৫৯ জন, দক্ষিণ দিনাজপুরে ৪৬ জন, দার্জিলিংয়ে ৪০ জন, কোচবিহারে ৩৯ জন, উত্তর দিনাজপুরে ৩০ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এ ছাড়া এদিন যে ৪৯ জনের করোনায় মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে কলকাতার ১৮ জন রয়েছেন। এ ছাড়া উত্তর ২৪ পরগনার ৯ জন, হাওড়ার ৫ জন এবং হুগলি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩ জন করে প্রাণ হারিয়েছেন এই ভাইরাসের সংক্রমণে।
এদিকে, এদিন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের করোনা সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে। কয়েকদিন ধরেই তাঁর শরীরে করোনা ভাইরাসের নানা উপসর্গ দেখা যাচ্ছিল। সোমবার তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষা হয়। মঙ্গলবার সেই পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তাঁকে বর্ধমান থেকে কলকাতা নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি এখন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি। উল্লেখ্য, এর আগে রাজ্যের অপর মন্ত্রী সুজিত বসু করোনায় সংক্রমিত হয়েছিলেন। কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা হয়। শেষে তিনি করোনা–মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরে যান।
কিছুদিন ধরে রাজ্যের শাসক দলের বিধায়ক ও মন্ত্রীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ঘটতে দেখা যাচ্ছে। এগরার তৃণমূল বিধায়ক সমরেশ দাশ, শিবপুরের বিধায়ক জটু লাহিড়ী, মহেশতলার বিধায়ক দুলাল দাশ, চোপড়ার বিধায়ক রুকবানুর রহমানও করোনা সংক্রমিত হয়ে বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে করোনা সংক্রমিত হয়ে ফলতার তিনবারের তৃণমূল বিধায়ক তমোনাশ ঘোষের মৃত্যু হয়েছে। বিরোধী দলগুলির মধ্যে সিপিএম নেতা শ্যামল চক্রবর্তীরও মৃত্যু হয়েছে করোনায়।